কার এয়ার কন্ডিশনারের মেকানিক্যাল সার্কিটের কম্পোনেন্টসমূহের বর্ণনা

এসএসসি(ভোকেশনাল) - রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং-১ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | | NCTB BOOK
13
13

এয়ার কন্ডিশনিং মেকানিক্যাল সার্কিটের কম্পোনেন্ট সমূহ-

  • কম্প্রেসর 
  • রিসিভার 
  • ম্যাগনেটিক ক্লাচ কন্ট্রোল 
  • কন্ডেন্সার 
  • ড্রায়ার বা স্ট্রেইনার 
  • সলিনয়েড বাইপাস ভাল্ব 
  • ইভাপোরেটর 
  • অ্যাকুমুলেটর 
  • সাকশন থ্রোটল কন্ট্রোল 
  • এক্সপানশন ডিভাইস/ভাল্ব 
  • লিকুইড ইন্ডিকেটর 
  • অয়েল সেপারেটর 
  • হিট এক্সচেঞ্জার।

কম্প্রেসর

কম্প্রেসর হচ্ছে এক ধরনের পাম্প যা দিয়ে অটোমোবাইল এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের রেফ্রিজারেন্টকে চাপ প্রয়োগ করা হয়। অর্থাৎ ৰায়ৰীয় (Gasius) পদার্থের অণুগুলো সংকোচন (Compress) করে চাপ বৃদ্ধি করা হয়। কম্প্রেসর গাড়ির ফ্রন্ট সাইডে ইঞ্জিনের পাশে সেট করা থাকে। ম্যাগনেটিক ক্লাচের মাধ্যমে বেল্ট দিয়ে ইঞ্জিন জাঙ্কশ্যাফট গুলির সাথে সংযাগ দেয়া হয়। কার এরার কন্ডিশনিং সিস্টেমে সাধারণত সোয়াল প্লেট কম্প্রেসর ব্যবহৃত হয়। ইঞ্জিন চলন্ত অবস্থায় এটি চালু থাকে। গাড়ির আইডো স্পীডে কম্প্রেসর ফুল স্পীডে চলতে পারে কারণ এতে ক্লাচ ও গিয়ার ব্যবহার করা হয়।

কম্প্রেসর মূল কাজগুলো হল-

  • ইভাপোরেটর হতে লো প্রেশার বা শোষণ করে 
  • রেফ্রিজারেন্টের চাপ ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে 
  • হাই প্রেশার বাম্পকে কন্ডেন্সারে প্রেরণ করে

কন্ডেন্সার

রেফ্রিজারেন্ট সাইকেলের যে অংশে সুপ্ততাপ অপসারণের মাধ্যমে হাই প্রেশার বাস্পীয় (Vapor) রেফ্রিজারেন্টকে তরলে পরিণত করে তাকে কন্ডেসার বলে। রেডিয়েটরের মতো ইঞ্জিনের সামনে কভেলার স্থাপন করা হয় এবং সিস্টেমে কম্প্রেসরের পরে এবং রিসিভারের আগে বসানো থাকে। গাড়ি যখন চলতে থাকে তখন সামনের বাধাপ্রাপ্ত বাতাস কন্ডেলারের তাপ শোষণ করে- ফলে রেফ্রিজারেন্ট ঠাণ্ডা ও ঘনীভূত হয় | গাড়ি থামা অবস্থায় ব্যাটারির বিদ্যুৎ চালিত ফ্যান দিয়ে ঠাণ্ডা করা হয়।

চিত্র ২.৩৬ কন্ডেনসার

কন্ডেন্সারের মূল কাজ-

  • রেফ্রিজারেন্ট ইভাপোরেটার যে তাপ গ্রহণ করে কন্ডেন্সার সে তাপ বর্জন করে
  • কম্প্রেসর যে তাপ বৃদ্ধি করে কন্ডেসার সে ভাপ বর্জন করে 
  • কম্প্রেসার বাস্পীয় রেফ্রিজারেন্টকে তরলে পরিণত করে
  • কভেসার রেফ্রিজারেন্টকে সম্পৃক্ত (Saturated) তাপমাত্রায় পৌছায়

ইভাপোরেটর

এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের যে অংশে তরল রেফ্রিজারেন্ট সুপ্ততাপ গ্রহণ করে বাষ্পীভূত হয় তাকে ইভাপোরেটর বলে। ইভাপোরেটরকে হিট এক্সচেঞ্জারও বলা হয়। কার এসিতে সাধারণত ফিন্স টাইপ ইভাপোরেটর ব্যবহার করা হয়।

ইভাপোরেটররের মূল কাজগুলো হল-

১) ইভাপোরেটর লো প্রেসারের তরল রেফ্রিজারেন্টকে বাস্পীভূত করে। 

২) ইভাপোরেটর নিজে তাপ গ্রহণ করে এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের অন্যান্য এলাকাকে তুলনামূলক নিম্ন তাপমাত্রায় আনতে পারে।

৩) এটি ভাগ বহনকারী উপাদান হতে তাপ শোষণ করে। 

৪) ইভাপোরেটর এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

কার এয়ারকন্ডিশনিং-এ সাধারণত দুই প্রকারের ইভাপোরেটর ব্যবহৃত হয়-

ক) ফিল টাইপ ইভাপোরেটর (Fines Type Evaporator) 

(খ) ফোর্সড কনডেকশন টাইপ ইভাপোরেটর (Forced Convection Type Evaporator)

এক্সপানশন ডিভাইস/ভালভ

এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমে যে ডিভাইস দিয়ে তরল রেফ্রিজারেন্ট এর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাকে এক্সপানশন ডিভাইস/ভাষ বলে। কার এসিতে ব্যবহৃত এক্সপানশন ডিভাইস তিন প্রকার-

 

রিসিভার

রিসিভার এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমের রেফ্রিজারেন্ট জমা রাখে। রিসিভার এমন একটি ডিভাইস যা এরারকন্ডিশনিং সিস্টেমের সাইকেলে লিকুইড বা তরল রেফ্রিজারেন্টকে ইভাপোরেটরে প্রবাহের নিশ্চয়তা প্রদান করে। এটি কন্ডেন্সার ও কন্ট্রোল ডিভাইসের মধ্যে ৰসানো থাকে। অটোমাবোইল এসিতে রিসিভার ও ড্রারার একই সাথে সন্নিবেশিত থাকে। সঠিকভাবে রেফ্রিজারেন্ট চার্জ অবস্থায় রিসিভার হতে এক্সপানশন ভাত পর্যন্ত তরল রেফ্রিজারেন্ট দিয়ে পূর্ণ থাকে।

ড্রায়ার বা স্ট্রেইনার

এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের যন্ত্রপাতি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা প্রয়োজন- এতে কোন ধরনের ময়লা, আর্দ্রতা, ক্ষতিকরি পদার্থ যেন না থাকে। যদি অপদ্রব্য থাকে তাহলে এক্সপানশন ভালভের সরু পথে আটকে গিয়ে রেফ্রিজারেন্ট সরবরাহে বাঁধার সৃষ্টি করতে পারে। তাই স্ট্রেইনার বা ফিস্টার সম্বলিত ড্রায়ার ব্যবহার করা হয়।

অ্যাকুমুলেটর

অ্যাকুমুলেটর, ইভাপোরেটর এবং কম্প্রেসর লো প্রেশার লাইনে সংযুক্ত থাকে। এর প্রধান কাজ হল ইভাপোরেটর হতে অনাকাঙ্কিত বা অতিরিক্ত ভরণ রেফ্রিজারেন্ট কম্প্রেসরে যেতে বাধা প্রদান করা, ফলে কম্প্রেসৱ তরল রেফ্রিজারেন্ট শোষণ করা হতে রক্ষা পায়।

লিকুইড ইনডিকেটর

লিকুইড ইনডিকেটর স্বচ্ছ কাঁচযুক্ত তরল পদার্থ পর্যবেক্ষণ যন্ত্রাংশ। এটি রিসিভার ও ড্রায়ারের একটা অংশ। তরল পদার্থের সাথে কোন বাষ্প বা ময়লা প্রবাহিত হচ্ছে কিনা তা এই লিকুইড ইনডিকেটরের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ করা যার। এর পার্শ্ববর্তী বায়ু অথবা রিসিভারের তাপমাত্রা ২৯° সেন্টিগ্রেড এর উপরে উঠলে গ্যাসের বাবল পরিলক্ষিত হয়।

ম্যাগনেটিক ক্লাচ

যখন অটোমোবাইল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমে কম্প্রেসর পরিচালনা দরকার তখন ম্যাগনেটিক ক্লাচটি নিয়ন্ত্রণ করলে কম্প্রেসর চালু হয়। ইঞ্জিনের পুলি দিয়ে ক্লাচটি সংযোজিত থাকে। রেফ্রিজারেন্ট এর চাহিদা কম্প্রেসরকে চালু বা বন্ধ করে। এটি একটি স্থির কয়েল বা বৈদ্যুতিক চুম্বকীয় (Magnetized) সার্কিট দিয়ে আটি হয়। এর ড্রাইভ শ্যাফটের সাথে আর্মেচার শ্যাফট থাকে। আর্মেচার শ্যাফটি চৌম্বকত্ব দিয়ে কম্প্রেসর শ্যাফটকে আটকে ফেলে এবং কম্প্রেসর চলতে শুরু করে। ম্যাগনেটিক ক্লাচ সংযোগ বা বিচ্ছিন্ন কোনটিতে ঘূর্ণায়মান (Rotating) কম্প্রেসর পুলির ঘূর্ণনে বাঁধা দেয় না।

সলিনয়েড বাইপাস ভালভ

সলিনয়েড ভালভ থার্মোস্ট্যাট এবং মেইন সুইচ সিরিজে সংযুক্ত থাকে । ইভাপোরেটরের তাপমাত্রা ০° হলে থার্মোস্ট্যাটের মলিনয়েড ভাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে সলিনয়েড বাইপাস লাইন খুলে যায় । ঐ সময়ে কন্ডেন্সার হতে উচ্চ চাপযুক্ত (High Pressure) গ্যাসীয় রেফ্রিজারেন্ট সলিনয়েড ভাত ৰাইপাস লাইন এবং ইভাপোরেটর হয়ে সাকশন লাইনের মধ্য দিয়ে কম্প্রেসরে ফিরে যায় । এই প্রক্রিয়ার ৩° সেন্টিােডে পৌঁছলে সলিনয়েড তালুত বন্ধ হয়ে যায় এবং আবার স্বাভাবিক প্রবাহ চলতে থাকে।

সাকশন থ্রোটল কন্ট্রোল 

অত্যাধুনিক অটোমাবোইল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমে এ ধরনের প্রোটন কন্ট্রোল ব্যবহার করা হয়। এর ইনলেট পোর্টে ইন্ডাপারেটরের আউটলেটের সাথে এবং আউটলেট পোর্ট কম্প্রেসরের সাকশন পোর্টের সাথে সংযোগ করা থাকে।

অয়েল সেপারেটর

রেফ্রিজারেন্ট কম্প্রেসর হতে নির্গমনের সময় এর সাথে কিছু পরিমাণ কম্প্রেসর অয়েল চলে আসে। অয়েল সেপারেটর এই অয়েলকে জমা করে। অয়েল সেপারেটর ভার্টিক্যাল হাই প্রেশার লাইনে স্থাপন করা হয়।

হিট এক্সচেঞ্জার

এটি সাকশন লাইন এবং লিকুইড লাইনের মধ্যে ভাগ বিনিময়ের কাজে হিট এক্সচেয়ার ব্যবহৃত হয়। যে তরল রেফ্রিজারেন্ট এক্সপানশন তাতে বার তাকে আরো শীতল করে এবং যে গ্যাসীয় রেফ্রিজারেন্ট কম্প্রেসর শোষণ করে তাকে আরো গরম করে।

 

Content added || updated By
Promotion